পাঠতীর্থ (Class-Xii)

 Q.নাতিশীতোষ্ণ ঘূর্ণবাতের উৎপত্তি ও জীবনচক্রের বিবরণ দাও ।

উত্তর : নাতিশীতোষ্ণমন্ডলের উভয় গোলার্ধে 35°থেকে 65° অক্ষাংশের মধ্যবর্তী স্থানে যে ঘূর্ণবাতের উৎপত্তি হয়, তাকে নাতিশীতোষ্ণ ঘূর্ণবাত বলে।

[] নাতিশীতোষ্ণ ঘূর্ণবাত সম্পর্কে সর্বপ্রথম আলোকপাত করেন আবহবিদ ফিৎসরয় 1863 খ্রি: । পরবর্তী কালে 1918 খ্রি: নরওয়ের আবহবিদ v. বার্কনেস, J. বার্কনেস নাতিশীতোষ্ণ ঘূর্ণবাতের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বহুল আলোচিত মেরু সীমান্ত মতবাদ প্রকাশ করেন ।


[] উৎপত্তি থেকে বিনাশ পর্যন্ত নাতিশীতোষ্ণ ঘূর্ণবাতের জীবনচক্র 6টি পর্যায়ে বিভক্ত , এই পর্যায় গুলি হল---


1) প্রথম পর্যায়: দুটি ভিন্নধর্মী বায়ু, যথা- শীতল শুষ্ক মেরুবায়ু ও উষ্ন ও আর্দ্র পশ্চিমা বায়ু পাশাপাশি থেকে পরস্পরের সমান্তরালে বিপরীত মুখে প্রবাহিত হয় । ফলে একটি স্থির বায়ু প্রাচীর গঠিত হয় ।


2) দ্বিতীয় পর্যায়:উষ্ন বায়ু হালকা এবং শীতল বায়ু ভারী বলে উভয়ের সীমান্তে এক অস্থির অবস্থা ও আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এই অবস্থায় উষ্ন বায়ুপুঞ্জের সামনে উষ্ম সীমান্ত ও শীতল বায়ুপুঞ্জের সামনে শীতল সীমান্ত সৃষ্টি হয় । এই পর্যায়ে ঘূর্ণবাতের উৎপত্তি পূর্ণতা পায় ।


3) তৃতীয় পর্যায়: ঘূর্ণবাত সৃষ্টির 30 থেকে 50 ঘন্টার মধ্যে এই ঘূর্ণবাতের প্রাথমিক পূর্ণতা লাভ করে । উষ্নবায়ু

ক্ষেত্রটি ক্রমশ সংকুচিত হাতে থাকে এবং শীতল বায়ুপ্রাচীর উষ্ন বায়ুপ্রাচীরের নাগাল ধরে ফেলে।


4) চতুর্থ পর্যায়: এই পর্যায়ে অতি দ্রুত শীতল সীমান্ত উষ্ন সীমান্ত কে সংকুচিত করে ফেলে এবং ঘূর্ণবাত ক্রমশ প্রবল থেকে তীব্রতর হয়। উষ্ন বায়ু উপরে উঠে ঘনীভূত হয় এবং উষ্ন সীমান্তে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায় ।


5) পঞ্চম পর্যায়: এই পর্যায়ে শীতল সীমান্ত অতি দ্রুত গতিতে অগ্রসর হয়ে উষ্ন সীমান্ত কে ধরে ফলে এবং  উভয় সীমান্ত একসঙ্গে মিলিত হয়ে একটি অভিন্ন সীমান্তে পরিণত হয়, এভাবেই অন্তর্ধৃতি বায়ুপ্রাচীরের সৃষ্টি হয়।


6) ষষ্ঠ পর্যায়: এই পর্যায়ে শীতল বায়ুপুঞ্জ সমগ্র অঞ্চলটি দখল করে নেয়, ফলে উষ্ন বায়ুপুঞ্জ সম্পূর্ণভাবে বিলীন হয়ে যায় । পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে তাপশক্তি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়, একে ফ্রন্টেলিসিস বলে। অবশেষে ঝড়, বৃষ্টিপাত, বজ্রপাত ইত্যাদি বন্ধ হয়ে ঘূর্ণবাতের বিনাশ হয়।



Popular posts from this blog

Geography- (সামুদ্রিক কার্যকলাপ)