𝐏𝐀𝐓𝐇𝐀𝐓𝐈𝐑𝐓𝐇𝐀 (Geography)

কৃষিকাজ:

লাতিন শব্দ Ager অর্থাৎ ভূমি এবং Culture অর্থাৎ কর্ষণ করা থেকে Agriculture শব্দটি এসেছে।

সংজ্ঞা:

অধ্যাপক জিমারম্যানের মতে , জমিতে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী মানুষ যখন উদ্ভিদ ও প্রাণীজগতের স্বাভাবিক জন্ম ও বৃদ্ধির প্রক্রিয়ার সুযোগ নিয়ে নিজের চাহিদা মেটানোর জন্য উদ্ভিদ ও প্রাণীজ দ্রব্য উৎপাদন করে , তখন তাকে কৃষিকাজ বলে।

প্রশ্ন: ব্যাপক কৃষি রপ্তানি ভিত্তিক হওয়ার কারণ গুলি কি কি? শস্যাবর্তন এর দুটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য লেখ? ভারতের ডাল চাষের সমস্যা কি কি?  3+2+2

উঃ যেসব অঞ্চলে মোট জমির তুলনায় জনসংখ্যা কম সেখানে কম , কায়িক শ্রম এবং অধিক যান্ত্রিক শক্তি ও জড়শক্তির সাহায্যে সুবিশাল কৃষিক্ষেত্রে শস্য বিশেষীকরণের মাধ্যমে যে কৃষি কাজ সম্পন্ন হয় , তাকে ব্যাপক কৃষি বলে।

ব্যাপক কৃষি প্রধানত রপ্তানি ভিত্তিক তার কারণ গুলি হল-

(i) অভ্যন্তরীণ চাহিদা কম: এইসব অঞ্চলে কৃষি ক্ষেত্রের আয়তন অনেক বড় সেজন্য ব্যাপক পরিমাণে কৃষিজ ফসল উৎপাদিত হয়। কিন্তু জনসংখ্যার পরিমাণ কম থাকায় অভ্যন্তরীণ চাহিদা কম ,সেজন্য উদ্বৃত্ত ফসল রপ্তানি করতে হয়।

(ii) অধিক উৎপাদন : জলবায়ু ও মৃত্তিকার ওপর নির্ভর করে যে অঞ্চলে যে ফসল সর্বোৎকৃষ্ট ভাবে উৎপন্ন হয় সেখানে সেই ফসল চাষ করা হয়। ফলে অধিক ফসল উৎপাদিত হয় ,যেগুলো অধিকাংশ বাজারে বিক্রি করা হয়।

(iii) উদ্দেশ্য: ব্যাপক কৃষিকাজে নিযুক্ত মালিক, শ্রমিক প্রত্যেকের একটিই উদ্দেশ্য থাকে যে , উচ্চ ফলনশীল বীজ, কীটনাশক ,রাসায়নিক সার,উন্নত যন্ত্রপাতি ,ব্যবহার করে প্রচুর ফসল উৎপাদন করা ও আন্তর্জাতিক বাজার থেকে মুনাফা অর্জন করা।

[] শস্যাবর্তনের দুটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য:

(i) বিভিন্ন শস্যের পর্যায়ক্রমিক উৎপাদন: একই জমিতে সারা বছর বিভিন্ন ধরনের শস্য অত্যন্ত নিবিড়ভাবে চাষ করা হয়।

(ii) জমির উর্বরতা বৃদ্ধি: জমির উর্বরতা বৃদ্ধির জন্য মনুষ্য খাদ্য ও পশুখাদ্য একই সঙ্গে পরপর চাষ করা হয়। দানাশস্য ও শুঁটি জাতীয় শস্য চাষ করার ফলে জমিতে নাইট্রোজেন মিশে যায়, ফলে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়।

[] ভারতের ডাল চাষের প্রধান সমস্যা গুলি হল:

(i) স্বল্প উৎপাদন: ডাল উৎপাদনে ভারত পৃথিবীতে প্রথম স্থান অধিকার করলেও হেক্টরপ্রতি উৎপাদনের মাত্রা 729 কেজি/হেক্টর , সেখানে সমগ্র পৃথিবীতে উৎপাদন 759 কেজি/হেক্টর।

(ii) বৃষ্টিপাতের খামখেয়ালীপনা: মৌসুমির বৃষ্টিপাতের খামখেয়ালীপনা জন্য কোথাও অধিক বৃষ্টিপাত কোথাও কম বৃষ্টিপাত হওয়ায় ডাল উৎপাদন দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

(iii) কৃষিজমি: ডাল চাষে নিযুক্ত মাথাপিছু কৃষিক্ষেত্রের পরিমাণ খুবই কম।

(iv) জলসেচ: খরা প্রবণ রাজ্য গুলিতে (মধ্যপ্রদেশ , রাজস্থান) পর্যাপ্ত জল সেচের ব্যবস্থা নেই।

(v) পরিকাঠামোর অভাব: সরকারিভাবে ডাল সংগ্রহ ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেই। সেজন্য প্রতি বছর প্রায় 25% নষ্ট হয়ে যায়।

প্রশ্ন: নিবিড় জীবিকা সত্ত্বা ভিত্তিক কৃষি তে মাথাপিছু উৎপাদন কম কেন?         2

উঃ যতটা সম্ভব বেশি শ্রম ও মূলধন বিনিয়োগ করে কম পরিমাণ জমি থেকে সর্বোচ্চ ফসল উৎপাদন করা কে নিবিড় জীবিকা সত্ত্বা ভিত্তিক কৃষি বলে । এই কৃষিতে মাথাপিছু উৎপাদন কম কারণ-

(i) জনসংখ্যার অধিক চাপ: নিবিড় জীবিকা সত্ত্বা ভিত্তিক কৃষি অনুসৃত দেশগুলি (ভারত, চীন) প্রভৃতি দেশগুলির জমিতে সর্বোচ্চ ফলন হলেও জনসংখ্যার অত্যাধিক চাপ থাকায় মাথাপিছু উৎপাদন কম হয়।

(ii) ক্ষুদ্র জমি: এই কৃষিজমি গুলি পৈতৃকসূত্রে ভাগ হতে হতে ক্ষুদ্র জমিতে পরিণত হয়েছে। ফলে বাণিজ্যিকভাবে ফসল উৎপাদন সম্ভব নয় । তাই মাথাপিছু উৎপাদন কম।

নীল বিপ্লব: জলের সুস্থায়ী উন্নয়ন ও মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে নীল বিপ্লব বলে। ভারতের প্রোটিন জাতীয় খাদ্যের স্বয়ম্ভরতা অর্জনের লক্ষ্যে নীল বিপ্লবের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। ডক্টর অরূপ কৃষ্নন এই বিপ্লবের নেতৃত্ব দেন তাই তাঁকে নীল বিপ্লবের জনক বলা হয়।

সবুজ বিপ্লব: 1960 -এর দশকে চিরাচরিত কৃষি পদ্ধতির পরিবর্তে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি , সার ও উচ্চ ফলনশীল বীজের সাহায্যে নতুন কৃষি পদ্ধতি গড়ে তোলা হয় তাকে সবুজ বিপ্লব বলে। নরম্যান বোরল্যগ কে সবুজ বিপ্লবের জনক বলা হয়। ডঃ এম এস স্বামীনাথন কে ভারতের সবুজ বিপ্লবের জনক বলা হয়।

(𝐌𝐚𝐝𝐞 𝐛𝐲 𝐒.𝐃)